অবশেষে গাজায় হামাসের সাথে যুদ্ধবিরতি চুক্তি অনুমোদন করেছে ইসরাইলের পূর্ণ মন্ত্রিসভা। এর ফলে পূর্ব নির্ধারিত ঘোষণা অনুযায়ী আগামীকাল থেকে বন্দী মুক্তি ও বন্দিবিনিময়ে আর কোনো বাধা রইলো না।শনিবার এক সংক্ষিপ্ত বিবৃতিতে ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় জানিয়েছে, ছয় ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে বৈঠকের পর শনিবার সকালে ইসরাইল সরকার যুদ্ধবিরতি চুক্তি অনুমোদন করেছে।বিবৃতিতে আরো বলা হয়েছে, ইসরাইল সরকার একটি যুদ্ধবিরতি এবং বন্দী চুক্তি অনুমোদন করেছে। এর ফলে রোববার থেকে চুক্তিটি কার্যকর হওয়ার পথ প্রশস্ত হয়েছে।ইসরাইলি গণমাধ্যমের উদ্ধৃতি দিয়ে এএফপি জানিয়েছে, ইসরাইলি মন্ত্রিসভায় কিছু কট্টরপন্থি নেতা এই চুক্তির তীব্র বিরোধিতা করে। এমনকি তারপরও নেতানিয়াহুর জোট সরকারের ২৪ জন মন্ত্রী চুক্তির পক্ষে ভোট দিয়েছেন। অন্যদিকে আটজন এর বিরোধিতা করেছেন।
এর আগে শুক্রবার বিকেলে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী হামাসের সাথে যুদ্ধবিরতি চুক্তি অনুমোদন করে ইসরাইলের নিরাপত্তা মন্ত্রিসভা। প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে ভোটাভুটির পর চুক্তি অনুমোদন করা হয়েছে বলে জানিয়েছে জেরুজালেম পোস্ট।তখন ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়, ‘সব রাজনৈতিক, নিরাপত্তা ও মানবিক দিক পর্যবেক্ষণের পর এবং প্রস্তাবিত চুক্তি যুদ্ধের লক্ষ্য অর্জনকে সমর্থন করে’ এটা বোঝার পর চুক্তিটি গ্রহণ করেছে নিরাপত্তা মন্ত্রিসভা।বিবৃতিতে আরো বলা হয়েছে, নিরাপত্তা মন্ত্রিসভা ‘সরকারকে প্রস্তাবিত রূপরেখা অনুমোদন করার’ সুপারিশও করেছে।মন্ত্রিসভায় ভোটাভুটির পর শনিবার ভোরে নেতানিয়াহুর কার্যালয় জানিয়েছে, ‘সরকার বন্দীদের ফিরিয়ে আনার পরিকল্পনা অনুমোদন করেছে।’
এছাড়া আইন মন্ত্রণালয় শুরুতেই মুক্তি দেয়ার লক্ষ্যে ৯৫ জন ফিলিস্তিনি বন্দির তালিকা প্রকাশ করেছে। এর মধ্যে ৬৯ নারী ১৬ পুরুষ এবং ১০ জন শিশু রয়েছে।চুক্তির শর্তের মধ্যে রয়েছে, গাজা উপত্যকা থেকে ইসরাইলি বাহিনী প্রত্যাহার করা হবে এবং হামাসের হাতে আটক বন্দিদের মুক্তির বিনিময়ে ইসরাইলের কারাগারে থাকা ফিলিস্তিনি বন্দিদেরও মুক্তি দেয়া হবে।চুক্তি অনুযায়ী, প্রথম ধাপে ৩৩ জন ইসরাইলি বন্দিকে মুক্তি দেবে হামাস। যাদের মধ্যে নারী, শিশু ও ৫০ বছরের বেশি বয়সী পুরুষ রয়েছেন।চুক্তির দ্বিতীয় ধাপ কার্যকরের বিষয়ে আলোচনা প্রথম ধাপের ১৬তম দিনের মধ্যে শুরু হবে। সেখানে অবশিষ্ট সব ইসরাইলি বন্দিকে মুক্তি, স্থায়ী যুদ্ধবিরতি এবং গাজা থেকে ইসরাইলি বাহিনী সম্পূর্ণভাবে প্রত্যাহারের বিষয় অন্তর্ভুক্ত থাকতে পারে।
তৃতীয় ধাপে অবশিষ্ট লাশগুলোর ফেরত দেয়া এবং গাজা পুনর্গঠনের কাজ শুরুর কথা রয়েছে। এই কাজ মিসর, কাতার ও জাতিসঙ্ঘের তত্ত্বাবধানে পরিচালিত হবে।